মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার কেন্দ্রে দীর্ঘদিন ধরেই রয়েছে ফিলিস্তিনের গাজা অঞ্চল। ২০২৩ সালের শেষের দিকে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে শুরু হওয়া সশস্ত্র সংঘর্ষ এখনো থেমে যায়নি। প্রতিদিনই বোমা বর্ষণ, ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ও বিমান হামলায় ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে গাজার আবাসিক এলাকা, হাসপাতাল, স্কুল ও শিশু কেন্দ্রগুলো।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত কয়েক হাজার সাধারণ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যা উদ্বেগজনকভাবে বেশি। লক্ষাধিক মানুষ গৃহহীন হয়ে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
মানবিক সহায়তা প্রবেশে বাধা:
গাজায় ত্রাণ প্রবেশের পথগুলো প্রায় বন্ধ। একমাত্র রাফা বর্ডার দিয়ে মাঝে মাঝে কিছু ত্রাণ ঢুকলেও তা চরমভাবে অপর্যাপ্ত। খাদ্য, পানি, ওষুধ—সবকিছুরই তীব্র সংকট। অনাহারে শিশুদের মৃত্যু বেড়ে যাচ্ছে, আর মায়েরা সন্তানদের মুখে খাবার তুলে দিতে পারছেন না।
হাসপাতালের ভয়াবহ অবস্থা:
গাজার হাসপাতালগুলো বিদ্যুৎ ও জ্বালানির অভাবে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। চিকিৎসকদের হাতে নেই পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি বা ওষুধ। আহতদের জন্য নেই পর্যাপ্ত শয্যা। অনেক চিকিৎসক ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় ডিউটি করে চলেছেন।
বিশ্বের প্রতিক্রিয়া:
জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ও বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা গাজার পরিস্থিতিকে “মানবাধিকার বিপর্যয়” বলে আখ্যা দিয়েছে। বিশ্বের নানা প্রান্তে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ চলছে। বাংলাদেশ, তুরস্ক, দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দেশগুলো সরাসরি ফিলিস্তিনের পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছে।
ইসরায়েল বলছে ‘আত্মরক্ষার অধিকার’, হামাস বলছে ‘মুক্তির যুদ্ধ’:
ইসরায়েল তাদের প্রতিক্রিয়ায় বলছে, এটি “আত্মরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সামরিক পদক্ষেপ।” অন্যদিকে হামাসের দাবি, তারা ফিলিস্তিনিদের মুক্তি এবং স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য লড়ছে। তবে এই যুদ্ধের মূল শিকার হয়ে উঠেছে সাধারণ মানুষ।
গাজার ভবিষ্যৎ কী?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এভাবে চলতে থাকলে গাজা এক পর্যায়ে বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠবে। দারিদ্র্য, খাদ্য সংকট, পানির অভাব ও অবকাঠামো ধ্বংসের কারণে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম সেখানে টিকে থাকতে পারবে না।
বাংলাদেশের অবস্থান:
বাংলাদেশ শুরু থেকেই ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের পক্ষে। বাংলাদেশ সরকার আন্তর্জাতিক মহলকে এই রক্তক্ষয়ী সংঘাত বন্ধে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে ত্রাণ সহায়তার ঘোষণা দেওয়া
0 Comments
আপনার মতামত দিন!